বাগধারা
- অন্ধের যষ্টি (একমাত্র অবলম্বন) – বিধবার ছেলেটিই এখন তার অন্ধের যষ্টি।
- অমাবস্যার চাঁদ (যার দর্শন পাওয়া যায় না) – আজকাল তোমার দেখাই পাই না, তুমি কি অমাবস্যার চাঁদ হয়ে গেলে?
- অর্ধচন্দ্র দেওয়া (গলাধাক্কা দেওয়া) – দারোয়ান, এই অভদ্র ছেলেটিকে অর্ধচন্দ্র দিয়ে বের করে দাও।
- অরণ্যে রোদন (নিষ্ফল আবেদন) – কৃপণের নিকট ধার চাওয়া আর অরণ্যে রোদন করা একই কথা।
- আকাশ-পাতাল (ব্যবধানে বিশালতা)- জনি ও রনি বন্ধু বটে, কিন্তু তাদের আদর্শের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ।
- আক্কেল সেলামী (অনভিঙ্গতার দন্ড) – বিনা টিকেটে রেলভ্রমণে আমার একশত টাকা আক্কেল সেলামী দিতে হল।
- আকাশ-কুসুম (অসম্ভব কল্পনা) – ছাত্র ভাল নয়, অথচ এই ছেলেকে নিয়ে বাবার আকাশ কুসুম চিন্তা ভাবনা।
- আষাঢ়ে গল্প (কাল্পনিক গল্প) – আনিস আষাঢ়ে গল্প শুনতে পছন্দ করে।
- ইঁদুর কপালে (মন্দ ভাগ্য) – শখ করে সার্টটা কিনলাম, অথচ ইঁদুর কপালে বলে সার্টটা ছেড়া বের হল।
- ঈদের চাঁদ (আকাঙ্ক্ষিত বস্তু) – হারানো ছেলেকে ফিরে পেয়ে মা যেন ঈদের চাঁদ হাতে পেলেন।
- উত্তম-মাধ্যম (প্রহার) – আজ করিম দুষ্টুমি করে অনেক উত্তম-মাধ্যম খেয়েছে।
- এলাহি কান্ড (বিরাট ব্যাপার) – মন্ত্রি তার মেয়ের বিয়ের আয়োজনে এক এলাহি কান্ড ঘটিয়েছেন।
- কুলুর বলদ (পরিশ্রম করে অথচ ফল পায় না) – বড় ছেলেরা সবসময় কুলুর বলদ হয়, বিনিময়ে কিছুই পায় না।
- কড়ায় গন্ডায় (সম্পূর্ণ হিসাব) – মমিন সাহেব সচেতন লোক, সব হিসাব কড়ায় গন্ডায় বুঝে নেন।
- কান-কাটা (বেহায়া) – রুমির মতো কান-কাটা লোক খুব কম আছে।
- কাঠের পুতুল (নির্বাক) – এতা জঘন্য অন্যায় আমি কাঠের পুতুলের মতো দেখতে পারি না।
- খেয়ের খাঁ (চাটুকার) – খয়ের খাঁ লোকেরা কখনও উন্নতি করতে পারে না।
- গোড়ায় গলদ (মূলে ত্রুটি) – অংকটি কেমন করে মিলবে , এ যে গোড়ায় গলদ রয়েছে।
- গোবরে পদ্নফুল (অস্থানে ভাল জিনিস) – ভিখারীর ঘরে মেধাবী ছেলে এ যেন গোবরে পদ্নফুল।
- ঘোড়ার ডিম (অলিক বস্তু) – ঘোড়ার ডিম বলে বাস্তবে আসলে কিছুই নেই।
- চাঁদের হাট (অত্যন্ত সুখ) – লটারী জিতে এখন তোমার সংসারে চাঁদের হাট বসেছে।
- চোখের পর্দা (লজ্জা) – মেয়েটির চোখের পর্দা নেই, যখন তখন পাড়ায় ঘুরে বেড়ায়।
- চোখের মণি (অতি প্রিয় বস্তু) – বিধবার একমাত্র পুত্র তার চোখের মণি।
- টনক নড়া (সজাগ হওয়া) – চুরি হওয়ার পর সবারই টনক নড়ে।
- চাকার কুমীর (প্রচুর চাকার মালিক) – অসাধু ব্যবসা করে রাতারতি টাকার কুমীর হওয়া যায়, কিন্তু শান্তি মিলে না।
- ঠোঁট কাটা (স্পষ্টভাসী) – রফিকের ঠোঁট কাটা স্বভাব কখনও বদলাবে না।
- ডুমুরের ফুল (অদৃশ্য বস্তু) – কি হে, তোমার যে দেখাই পাই না, তুমি কি ডুমুরের ফুল হলে নাকি?
- তাসের ঘর (ক্ষণস্থায়ী) – সবার জীবনই তাসের ঘরের মত।
- দহরম মহরম (খুব মাখামাখি) – দুষ্টু ছেলের সাথে দহরম মহরম ভাব করো না।
- দুধের মাছি (সুসময়ের বন্ধু) – পকেটে টাকা থাকলে দুধের মাছির অভাব হয় না।
- নয় ছয় (অপচয়) - অপদার্থ ছেলেরা বাবার টাকা নয় ছয় করে বেড়ায়।
- পটল তোলা (মারা যাওয়া) – বৃদ্ধা মহিলাটি এতোদিনে পটল তুলেছেন।
- বকধার্মিক (ভন্ড) – সে একজন বকধার্মিক লোক।
- বাঘের দুধ (দুঃসাধ্য বস্তু) – টাকা হলে বাঘের দুধও পাওয়া যায়।
- ব্যাঙের সর্দি (অসম্ভব) – আমার মতো দাগি আসামীকে জেলের ভয় দেখাচ্ছ, এ যে ব্যাঙের সর্দির অবস্থা।
- বালির বাঁধ (ক্ষণস্থায়ী) – জীবন সংসার আসলে বালির বাঁধের মতো অবস্থা।
- ভিজে বিড়াল (ভাল মানুষ সাজা) – রমজানের মতো লোক হতে সাবধান, সে একজন ভিজে বিড়াল।
- মগের মুল্লুক (অরাজকতা) – তুমি যা খুশি তাই করতে পার না, কারন এটা মগের মুল্লুক নয়।
- হ-য-ব-র-ল (বিশৃঙ্খল) – জামা-কাপড় গুলো হ-য-ব-র-ল অবস্থায় ফেলে রেখেছো কেন?
- হাত টান (চুরির অভ্যাস) – তোমার হাত টানের অভ্যাসটা এখনও গেল না।
- কান পাতলা (সব কথাই বিশ্বাস করে যে) – তোমার মতো কান পাতলা লোক দিয়ে বিচার সালিশ হয় না।
- খাবি খাওয়া (হিমশিম খাওয়া) – করিম সাহেব চাকরির সামান্য টাকায় সংসার চালাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত খাবি খাচ্ছে।
- গোঁফখেজুরে (নিতান্ত অলস) – তোমার মতো গোঁফখেজুরে লোকের উন্নতি হবে কীভাবে?
- গোবর গণেশ (মূর্খ) – রহিমের মত এমন গোবর গণেশ আমি আর কোথাও দেখি নাই।
- গলাকাটা (সাংঘাতিক) – ঢাকা শহরের অনেক দোকানেই জিনিস পত্রের গলাকাটা দাম রাখে।
- ঝাঁকেরে কৈ (একই গোত্রের) – এরা সবাই ঝাঁকের কৈ, একটাকে ধরলেই সব ধরা পড়বে।
- তীর্থের কাক (সাহায্যের প্রত্যাশী) – গরিব লোকেরা ভোর থেকে সাহায্যের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে তীর্থের কাকের মতো বসে আছে।
- ননীর পুতুল (কোমল দেহ) – আহা!বাছাধনের রোদের আঁচ সয় না, এ যেন ননীর পুতুল।
- মিছরির ছুরি (মুখে মধু অন্তরে বিষ) – করিম সাহের কথায় কথায় মিছরিরছিুরি ব্যবহার করতে ওস্তাদ।
- হাতের পাঁচ (শেষ সম্বল) – হাতের পাঁচ যে বিশটি টাকা ছিল, তাও ছেরলর জন্য ঔষধ কিনতে শেষ হল।
No comments:
Post a Comment